বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন নির্দেশিকা
২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষার জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করেছে জাতীয় শিক্ষা ক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এনসিটিবি এর ওয়েবসাইটে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রকাশ করা হয়। ১১/০৯/২০২৪ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্তকরণ এর পাশাপাশি প্রশ্নের ধারা ও মান বন্টন সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে।
উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ধারার মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর শিখনকালীন এবং বার্ষিক পরীক্ষা পরিমার্জিত মূল্যায়ন নির্দেশনার আলোকে অনুষ্ঠিত হবে। তবে মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষার বিশেষায়িত বিষয় সমূহের এবং দশম শ্রেণীর মূল্যায়ন কার্যক্রম পূর্বের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হবে।
শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা পরিচালনার সাধারণ নির্দেশনা
এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত মূল্যায়ন নির্দেশিকায় নিম্নে উল্লেখিত নির্দেশনা
সমূহের আলোকে বার্ষিক মূল্যায়ন ২০২৪ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া
হয়েছে।
- ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।
- মূল্যায়ন কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে।
- সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ নিজস্ব তত্ত্বাবধানে শিক্ষকগণের দ্বারা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের নমুনা অনুসরণ করে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে। তবে কোনক্রমেই নমুনা প্রশ্নপত্র হুবহু ব্যবহার করা যাবে না। প্রণীত প্রশ্নের সাহায্যে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
- লিখিত পরীক্ষার উত্তর লেখার জন্য পূর্বের ন্যায় বিদ্যালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় খাতার সরবরাহ করতে হবে।
- প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রমের মোট নম্বর হবে ১০০। এর মধ্যে শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব (Weightage) হবে ৩০% এবং বার্ষিক পরীক্ষার গুরুত্ব (Weightage) হবে ৭০%। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জিপি (GP) নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
শিখনকালীন মূল্যায়নের নির্দেশনা
- প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে নির্দেশিত একক কাজ, জোড়ায় কাজ, পোস্টার প্রেজেন্টেশানসহ যাবতীয় কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়নের মূল্যায়ন আইটেম হিসেবে বিবেচিত হবে। শিখনকালীন মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
- সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির আওতাধীন শিখনকালীন মূল্যায়নের যেসব কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং যেগুলো সামনে সম্পন্ন হবে সেগুলোর রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
- শিখনকালীন মূল্যায়নের যাবতীয় কার্যক্রম বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই সম্পন্ন করতে হবে।
বার্ষিক পরীক্ষার/মূল্যায়নের নির্দেশনা
- বার্ষিক পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে।
- লিখিত পরীক্ষার মোট সময় হবে ৩ ঘন্টা।
- লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের নির্দেশিকা, প্রশ্নের কাঠামো, মান বন্টন 'বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা'য় বিস্তারিত দেওয়া আছে।
- 'বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা'য় প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্র দেওয়া আছে।
বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জিপি (GP) নির্ধারণ পদ্ধতি
- শ্রেণী উত্তরণের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ের মোট নম্বর হবে ১০০। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে ধারাবাহিক/শিখনকালীন মূল্যায়নের Weightage হবে ৩০% এবং লিখিত বার্ষিক পরীক্ষার Weightage হবে ৭০%।
- যেহেতু প্রত্যেক বিষয়ে ধারাবাহিক/শিখনকালীন মূল্যায়নের জন্য বরাদ্ধকৃত মোট নম্বর ৩০ এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দকৃত মোট নম্বর ১০০, সেহেতু একজন শিক্ষার্থীর একটি বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ওই বিষয়ের ধারাবাহিক/শিখনকালীন মূল্যায়নে তার প্রাপ্ত নম্বর এর সাথে লিখিত বার্ষিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ৭০% যোগ করে ওই বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল বা গ্রেড নির্ণয় করতে হবে।
উদাহরণ
ধরা যাক, বাংলা বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নে মোট ৩০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থী "ক" এর প্রাপ্ত নম্বর ২৫ এবং লিখিত পরীক্ষার মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর ৮০। বাংলা বিষয়ে তার বার্ষিক ফলাফল/গ্রেড নির্ধারণের ক্ষেত্রে তার ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রাপ্ত ২৫ নম্বর এর সাথে লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত ৮০ নম্বরের ৭০% অর্থাৎ৮০X৭০%=৫৬ যোগ করে বাংলা বিষয়ে তার প্রাপ্ত মোট নম্বর হবে ২৫+৫৬=৮১। বাংলা বিষয়ের শিক্ষার্থী "ক" এর জিপি (GP- Grade Point) হবে ৫.০০ এবং লেটার গ্রেড হবে A+।
একটি বিষয়ে সর্বনিম্ন D গ্রেড পেলে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করা হবে। ৩ বা ততোধিক বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী D গ্রেড পেলে সে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না। তবে বিষয় শিক্ষকবৃন্দের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিশেষ বিবেচনায় তাকে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তরণের সুযোগ প্রদান করতে পারেন। বিশেষ বিবেচনার বিষয়টি শুধু ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে।
T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url