এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিএড চ্যালেঞ্জ

আজ একজন আমিকে নিয়ে লিখবো। একজন মানুষ যখন জাতি গড়ার দ্বায়িত্ব নেন তখন কর্মরত হোন শিক্ষানবিশ  হিসাবে। এই শিক্ষানবিশকালটা অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশের নয়। অন্যান্য দেশে প্রশিক্ষণের পরে কর্মক্ষেত্রে (শিক্ষা) যোগদান সম্পন্ন হয়, তবে আমাদের দেশে যোগদানের পর তা সম্পন্ন করার জন্য সরকারি শিক্ষক হলে মাউশি থেকে আর বেসরকারি হলে SMC (School Management Committee) থেকে অনুমতি নিতে হয়। আজ বেসরকারিদের নিয়েই লিখবো। কারন বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষকদের উপর যে  অত্যাচার  করা হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিএড চ্যালেঞ্জ

যাই হোক শুরু করা যাক বেসরকারি শিক্ষকদের বি.এড প্রশিক্ষনের অনুমতি বা এমপিও পাঠাতে কি ভোগান্তি হয় তা একটু লিখবো। বিশেষ করে মাদ্রাসার বা স্কুলের অনেক প্রধান আছেন যদি কেউ বিএড প্রশিক্ষণের অনুমতি চাই তাহলে তাকে ছাড় দিতে নারাজ। কারণ প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে বা অনেক নিয়ম কানুন দেখান। তবে দুঃখ হলেও সত্য ভাই হাদিয়া দিলে কিন্তু আপনি অনুমতি অনেক ক্ষেত্রে পেয়ে যাবেন। তবে এটাকে ঘুষ বলে কেউ অপমানিত করবেন না।

আবার অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান আছেন অতিথি শিক্ষক দিয়ে যেতে বলেন। আমার প্রশ্ন হলো বিএড যদি শিক্ষকের শিখন-শিখানো কার্যক্রমে কার্যকারী ভূমিকা রাখে তাহলে  সরকারি বি,এড কলেজে বি,এড করতে প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সভাপতি বাধা দিবে কেন? আবার যদি বাধা দেয় তাহলে  অনেক ক্ষেত্রে ইউএনও স্যার বা  ডিইও স্যারের স্মরণাপন্ন হলে ছাড় পাওয়া যায়। আমার কথা হচ্ছে যদি বি,এড শিক্ষণ-শিখনে কার্যকারী ভূমিকা রাখে তাহলে  প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সভাপতি  বাধা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন? আর যদি বিএড না প্রয়োজন হয় তাহলে বিএড করার দরকারটা কি? কারণ অনেক প্রতিষ্ঠান আছে বলে বেসরকারিতে বিএড করেন?  আমার প্রশ্ন হলো বেসরকারিতে বিএড করি আর সরকারিতেই করিনা কেন  ছুটির অনুমতি তো লাগবেই।

আবার বেসরকারিতে অনুমতি দিলে প্রতিষ্ঠানে সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে করতে হয় কিন্তু স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়না। তাহলে বুঝে নিতে হবে যে বি,এড করলে সরকারি ছুটির নিয়ম করে রেখেছেন? ছুটি দিতে বাধ্য কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো এই যে অনেক জায়গায় প্রশাসন নির্বাক থাকে আবার অনেক জায়গায় উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতা করেন। কিন্তু ট্রেনিং এর সাথে দক্ষতা জড়িত সুতরাং প্রতিষ্ঠান ছাড়তে দিতে না চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়না কেন? আপনি শিক্ষার মান ভালো করতে চাচ্ছেন কিন্তু শিক্ষকদের প্রশিক্ষনে বাধা প্রদানে আপনারা ব্যবস্থা নিবেন না তা হয় না? কারন আপনাদের কথা বলতে  হবে তাই বলেন।

আবার অনেকে ফোন দিয়ে বলছেন যে ভাই ফাইল পাঠাবো কিন্তু প্রধান স্বাক্ষর দিচ্ছেন না। তাই ফাইল রেডি করতে পারলাম না। এর চেয়ে দুঃখজনক কি হতে পারে বলেন? টাকা দিলে স্বাক্ষর মিলে এবং ফাইল পাঠানোর জন্য ফাইল প্রস্তুত করতে বলেন?  দূর্নীতি রুখতে হলে শিক্ষাখাতে যোগ্য লোক নিয়োগ দেওয়া জরুরি। তাহলে বলতে পারেন অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান কি অযোগ্য। আমি বলবো না ভাই যোগ্য কিন্তু জবাবদাহিতা নাই। জবাবদাহিতা থাকলে সবাই ঠিক হয়ে যাবে।

তবে আলহামদুলিল্লাহ  আমার প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যা করা দরকার তা করেন।আমার প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনকে  ও সহকর্মী স্যারদেরকে ধন্যবাদ জানাই যে উনারা শিক্ষানুরাগী। তাই শিক্ষকের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট সহযোগিতা করেন। এটা অতিশীঘ্রই সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। হয় ব্যবস্থা নেন  না হয় নিয়ম পরিবর্তন করেন। সুপারিশ পাওয়ার পর সরকারি কলেজে বি,এড  বাধ্যতামূলক তারপর প্রতিষ্ঠানে পাঠান। নয়তো প্রতীকী আমিই  একদিন হয়তো প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্ব  নিবো তখন যেহেতু আমি অত্যাচারিত হয়েছি, তাই এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

-------------শিক্ষক (এমপিওভুক্ত )

(সোর্স- ফেইসবুক পোস্ট)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url