ওজন কমানোর খাবার তালিকা - যেসব খাবার খেলে ওজন কমে
আপনি কি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে খুবই চিন্তিত? নিয়মিত শরীর চর্চা করেও ওজন কমাতে পারছেন না? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই। বিশেষজ্ঞদের মতে শরীর চর্চার পাশাপাশি ওজন কমানোর খাবার তালিকা- এর দিকেও নজর দেওয়াটা জরুরী। আপনি দ্রুত আপনার শরীরের ওজন কমাতে চাইলে ওজন কমানোর খাবার তালিকার দিকে একটু নজর দিন।
আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় বিশেষ কিছু খাবার একটু বেশি পরিমাণে যোগ করলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকরী সহায়ক হতে পারে। ওজন কমানোর খাবার তালিকা অনুসরণের পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চা করে আপনি খুব দ্রুত আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন। আজকে আমাদের আলোচনায় রয়েছে সেসব খাবার, যেসব খাবার খেলে ওজন কমে।
ভূমিকা
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চেষ্টা করার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনভাবেই
শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়তে না পারে। কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে এবং একটু
হাঁটাহাঁটি করলে সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাহলে আসুন ওজন কমানোর খাবার
তালিকা সম্পর্কে জেনে নেই-
টমেটো
আপনি যদি আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ওজন কমাতে চান, তাহলে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় টমেটোকে স্থান দিন। প্রতিদিনের ডায়েটে টমেটোর সালাদ কে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে আপনার শরীরের ওজন কমানোর কাজটি আপনার কাছে সহজ হবে। টমেটো শরীরে কারনিটিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। আবার কারনিটিন নামের এই অ্যামিনো অ্যাসিড ফ্যাটের জারণ ঘটাতে তথা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিনের খাবারে টমেটো যোগ করলে ফ্যাটের জারন বৃদ্ধি পায় প্রায় ৩০ শতাংশ। হলে দ্রুত ওজন হ্রাস পায়।
শসা
শসায় রয়েছে উচ্চমাত্রার পানি এবং নিম্নমাত্রার ক্যালরিযুক্ত উপাদান। আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চান তাহলে শসা কে আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। শসা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। সালাত এবং সূপে বেশি পরিমাণে শসা ব্যবহার করুন। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে হজমের ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাওয়া যায়। শসা খেলে খাবার দ্রুত হজম হয়। অতিরিক্ত মেদ শরীরে জমার সুযোগ পায় না। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকাম থার্মোজেনেসিস কে শক্তিশালী করে মেটাবলিজম এর হার বাড়ায়। এরা অন্যান্য
মরিচের মতো ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি না করে মেটাবলিজম বাড়াতে পারে। লাল ক্যাপসিকাম
হজমের শক্তি বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। যা পরোক্ষভাবে দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে
সাহায্য করে।
ছোলা
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি নিয়মিত অঙ্কুরিত ছোলা
খেতে পারেন। অঙ্কুরিত ছোলা ভিটামিন ও ফাইবারের অন্যতম উৎস। এতে পেট ভর্তি থাকে।
ফলে অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ওজন নিয়ন্ত্রণে
থাকে।
বাদাম
শরীরের ওজন ধরে রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে এক মুঠো বাদাম খান। আমাদের বাজারে অনেক ধরনের বাদাম পাওয়া যায়। বাদাম প্রোটিনের অন্যতম উৎস। প্রায় সবগুলো বাদামই ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
কটেজ বীজ বা সোয়াবিনের টোফু
ওজন কমানোর খাবার তালিকায় রাখতে পারেন কটেজ বীজ বা সোয়াবিনের টোফু। এতে দ্রুত আপনার শরীরের ওজন কমবে। কটেজ বীজে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম হারকে মজবুত করে। সোয়াবিন উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এটি শরীরের মেদ ঝরাতে সহায়তা করে।
দই
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে পারেন দই। গরুর দুধ থেকে তৈরি দইয়ে প্রতি ১০০
গ্রামে ৫৬ ক্যালরি থাকে। দই হল প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের অন্যতম উৎস।
এছাড়াও দইয়ে রয়েছে জিংক, ফসফরাস, প্রবায়োটিকের মতো আরও অন্যান্য উপাদান।
ডিম
ডিমে আছে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আয়রন যা ওজন কমানোর
জন্য উত্তম সহায়ক। তাই ডিম হতে পারে আপনার খাবারের তালিকায় অন্যতম উপাদান। ডিম
শুধু তরকারি হিসেবে না খেয়ে অমলেট, পোচ, সিদ্ধ বা হাফ বয়েল করে খেতে পারেন।
ডিমের কুসুমে একটু বেশি ফ্যাট থাকায় এ অংশ বাদ দিয়ে, শুধু সাদা অংশ খেতে পারলে
আরো ভালো হয়।
মাছ
মাছের তেলের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও মাছের মধ্যে থাকা অন্যান্য প্রোটিন
শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে দেয় না। এক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ বেশি উপকারী। কেননা
সামুদ্রিক মাছে বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই ওজন
নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত মাছ খেতে পারেন।
মুরগির মাংস
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মুরগির মাংস খেতে পারেন। রেডমিটে যেমন রক্তে কোলেস্টেরলের
মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে, মুরগির মাংসে সে ধরনের কোন ভয় থাকে না। মুরগির
মাংস খেলে ওজন কমে। মুরগির মাংস শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের যোগান দেয়।
ফল
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য বেশি পরিমাণে ফল খান। অধিকাংশ ফলে অতিরিক্ত
ফ্যাট থাকে না। তাই আপেল, আঙ্গুর, কমলালেবুর মত ফল খান। এ সকল ফল শরীরে শক্তি
যোগাবে পাশাপাশি ক্ষুধাও দূর করবে।
লেবু
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে প্রতিদিন লেবু পানি পান করুন। লেবু পানি গ্রহণকৃত
খাবার হজমে সহায়তা করে। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না। তাই প্রতিদিন ৪০০
মিলিমিটার কুসুম গরম পানিতে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
পানি
ওজন কমাতে পানির কোন বিকল্প নেই। বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। পানিতে কোন ফ্যাট থাকে না। পর্যাপ্ত পানি পান হজমে সাহায্য করে। ফলে অন্যান্য খাবারের সরবরাহকৃত ফ্যাট শরীরে জমতে দেয় না এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url