চাকুরীর চুক্তিপত্রের নমুনা

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

চাকুরীর চুক্তিপত্র

এই চুক্তিটি, ২০২৪ সালের মে মাসের ২৩ তারিখে, (কোম্পানির নাম) এবং (কর্মচারীর নাম ও ঠিকানা) এর মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এই নথিটি উক্ত দুই পক্ষের মধ্যে একটি কর্মসংস্থান চুক্তি গঠন করে এবং বাংলাদেশের আইন দ্বারা পরিচালিত হয়।

এই চুক্তির মধ্যে

(কোম্পানির নাম)-কে "নিয়োগকর্তা" হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে

এবং

(কর্মচারীর নাম)-কে "কর্মচারী" হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে

এখানে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ই একটি চাকুরীর চুক্তিতে প্রবেশ করতে চান৷ যেহেতু নিয়োগকর্তা কর্মচারীর পরিষেবাগুলি নিতে চান এবং কর্মচারী এই ধরনের পরিষেবা প্রদান করতে চান, তাই এই শর্তাবলী সেট করা হয়েছে। এই পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিবেচনায় পক্ষদ্বয় নিম্নলিখিত শর্তাবলীতে সম্মত হয়:

চাকুরীর মেয়াদঃ কর্মচারীর চাকুরী ১লা জুন ২০২৪ তারিখ থেকে শুরু হবে এবং একটি অব্যাহত থাকবে৷ এই চুক্তির বিধান অনুসারে সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট মেয়াদ।

দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ কর্মচারী সম্মত হন যে তিনি তার সর্বোত্তম কর্মদক্ষতার দ্বারা নিয়োগকর্তার কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব সততা ও বিশ্বস্ততার সাথে পালন করবেন। কর্মচারীকে সর্বদা কোম্পানির সমস্ত নীতি, নিয়ম এবং পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।

পদমর্যাদাঃ কর্মচারী “ব্রাঞ্চ ইনচার্জ” হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় কাজের ফাংশন এবং কর্তব্য সম্পাদন করা কর্মচারীর কর্তব্য। সময়ে সময়ে, নিয়োগকর্তা কর্মচারীর কাজের যুক্তিসঙ্গত সুযোগের মধ্যে অন্যান্য দায়িত্বও যোগ করতে পারেন।

মজুরী ও ভাতাদিঃ প্রদত্ত পরিষেবাগুলির জন্য কর্মচারীকে সর্বসাকুল্যে ১০,০০০/- টাকা (প্রতি মাস) মজুরি হিসেবে দেওয়া হবে এবং একটি বাৎসরিক কর্মদক্ষতা পর্যালোচনা সাপেক্ষে বাড়ানো হবে৷

অন্যান্য সুবিধাঃ নিয়োগকর্তার দ্বারা প্রদত্ত যেকোন সুবিধার পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করার অধিকার কর্মচারীর রয়েছে। তবে শিক্ষানবিশ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই কেবলমাত্র এই সুবিধাগুলি পাওয়া সম্ভব হবে।

শিক্ষানবিশ সময়কালঃ এটা উল্লেখ্য যে, কর্মচারী চাকুরীতে যোগদানের সময় থেকে প্রথম ০৬ মাস শিক্ষানবিশ সময়কাল হিসেবে বিবেচিত হবে। এই সময়ের মধ্যে, কর্মচারী পূর্ণমজুরীতে ছুটি বা অন্যান্য সুবিধার জন্য যোগ্য নয়। এই সময়ের মধ্যে, নিয়োগকর্তা অগ্রিম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কর্মচারীকে যে কোনও সময় চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়ার অধিকার রাখেন।

পূর্ণমজুরীতে ছুটিঃ প্রবেশনারি সময়কালের পরে, কর্মচারী নিম্নলিখিতভাবে পূর্ণমজুরীতে ছুটির জন্য যোগ্য হবেন:

  • সপ্তাহে ০১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে যা শুক্রবার বা সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকাভেদে অন্য কোন দিন হতে পারে।
  • রাষ্ট্র/সরকার ঘোষিত সকল ছুটি
  • অসুস্থ/ব্যক্তিগত ছুটি বছরে ২১ দিন (একটানা সর্বচ্চো ০৩ দিন)

নিয়োগকর্তা যে কোনো সময় এই ছুটির নীতি পরিবর্তন করার অধিকার সংরক্ষণ করেন।

পরিসমাপ্তিঃ একটি দীর্ঘ এবং পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গঠন করা উভয় পক্ষের উদ্দেশ্য। যাইহোক, এই সম্পর্ক যেকোনও সময় উভয় পক্ষের দ্বারা শেষ করা যেতে পারে। এক পক্ষ কমপক্ষে ০১ মাস পূর্বে লিখিত নোটিশের মাধ্যমে অন্য পক্ষকে অবহিত করবেন। কর্মচারী সমাপ্তির পরে নিয়োগকর্তার সকল সম্পদ ফেরত দিতে বাধ্য থাকবেন।

অ-প্রতিযোগিতা এবং গোপনীয়তাঃ একজন কর্মচারী হিসাবে দায়িত্ব পালনের সময় প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় তথ্য কর্মচারীর সাথে শেয়ার করা হতে পারে যা নিয়োগকর্তার নিজস্ব সম্পত্তি। কর্মচারীর প্রতিষ্ঠানের বাইরে এই তথ্য প্রকাশ করার অনুমতি নেই। নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত থাকাকালীন সময় কর্মচারী অন্য কোন নিয়োগকর্তা/প্রতিষ্ঠানের এমন কোন কাজে নিযুক্ত হতে পারবেন না যা চাকুরীরত প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতামূলক। আরও উল্লেখ্য যে কর্মচারীর চাকুরীর পরিসমাপ্তি ঘটলে, কর্মচারী কমপক্ষে ০৩ মাস সময়ের জন্য নিয়োগকর্তার ক্লায়েন্টদের কাছে ব্যবসার জন্য অনুরোধ করতে পারবেন না।

সংশোধনঃ এই চুক্তিটি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পূর্ণ চুক্তির প্রতিনিধিত্ব করে এবং পূর্ববর্তী কোনো লিখিত বা মৌখিক চুক্তিকে বাতিল করে। নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারী উভয়ের লিখিত সম্মতি প্রদান করে এই চুক্তিটি যে কোনো সময় সংশোধন করা যেতে পারে।

আইনি অনুমোদনঃ কর্মচারী সম্মত হন যে তিনি বাংলাদেশে কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ অনুমোদিত এবং আইনি ডকুমেন্টেশন সহ এর প্রমাণ দিতে পারেন। কর্মচারী এই ডকুমেন্টেশন আইনী রেকর্ডের জন্য নিয়োগকর্তার নিকট সরবরাহ করবেন।

চুক্তির শর্ত বাতিলঃ যদি উভয়পক্ষ সম্মত হয়ে এই চুক্তির কোনো অংশ অকার্যকর বা অপ্রয়োগযোগ্য বলে পাওয়া যায়, তবে তা রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং অবশিষ্ট বিধানগুলি তাদের পূর্ণ শক্তি এবং প্রভাব বজায় রাখবে।

অন্যান্য শর্তসমূহঃ

  • প্রত্যেক কর্মচারীকে দেয়া পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করতে হবে।
  • কোম্পানি থেকে দেয়া মোবাইল সিম কার্ড ২৪ ঘন্টাই সচল রাখতে হবে।
  • কোম্পানি থেকে প্রদত্ত মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে তার দায় কর্মচারীকে বহন করতে হবে।
  • কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
  • চাকুরীতে যোগদানের সময় কর্মচারী ভুল তথ্য বা ডকুমেন্ট সরবরাহ করলে নিয়োগকর্তা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
  • কর্তৃপক্ষ যে কোন সময় পূর্ব নোটিশ ছাড়া চাকুরির শর্তাবলী দেশের আইনের আলোকে পরিবর্তন/পরিবর্ধন করার বৈধ অধিকার সংরক্ষণ করেন। কোম্পানির শৃংখলা রক্ষার্থে সময়ে সময়ে প্রবর্তিত আভ্যন্তরীন নিয়ম কানুন কর্মচারী মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন।
  • অত্র কোম্পানিতে কর্মরত থাকাকালীন কর্মচারী অন্য কোথাও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাকুরী গ্রহণ করতে পারবেন না। চাকুরীর পরিসমাপ্তিকালে কর্মচারীর নিকট রক্ষিত আছে এমন কাগজপত্র, আইডি কার্ড, মোবাইল, সিম কার্ড বা অন্যান্য দ্রব্যাদি ফেরত প্রদানে বাধ্য থাকবেন। অন্যথায় কর্তৃপক্ষ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
  • কোম্পানির অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও কোম্পানির অভ্যন্তরে কোম্পানির জন্য ক্ষতিকারক কোন দ্রব্যাদি ব্যবহার ও বহন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  
  • নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসানের জন্য কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান আইনের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
  • চাকুরিরত অবস্থায় কর্মচারী অত্র প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা-সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্যাদি কোন ব্যক্তি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কারো নিকট প্রকাশ করতে পারবেন না। 
  • কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে একই ব্যবস্থাপনার আওতাধীন অন্য যে কোন প্রতিষ্ঠানে/ শাখায় আপনাকে বদলী করতে পারবেন।

এখতিয়ারঃ এই চুক্তিটি বাংলাদেশের আইন অনুসারে পরিচালিত, ব্যাখ্যা করা এবং বোঝানো হবে। সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে নিয়োগকর্তা অফিসিয়াল কোম্পানির এজেন্টদের অনুমোদনের মাধ্যমে এবং এখানে লিখিতভাবে দেওয়া কর্মচারীর সম্মতির মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ার সাথে এই চুক্তিটি সম্পাদন করেছেন।

উপরোক্ত শর্তাধীনে আমরা নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারী স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ্য শরীরে অন্যের বিনা প্ররোচনায় আমরা উভয় পক্ষ চুক্তিপত্রের সমুদয় শর্ত পাঠ করে ইহার মর্ম ও ফলাফল সম্যক অবগত হয়ে সাক্ষীগনের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করলাম।

নিয়োগকর্তা কর্মচারী
(নিয়োগকর্তার নাম ও পদবী) (কর্মচারীর নাম)
(কোম্পানির নাম) (কর্মচারীর ঠিকানা)

সাক্ষীগণের স্বাক্ষর, নাম ও ঠিকানাঃ

১।

২।

৩।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url