ফোন স্ক্রলিংয়ের আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় - বিশেষজ্ঞদের ৩টি কার্যকর পরামর্শ

আজকাল আমাদের অনেকেই সময়ের বড় একটা অংশ কাটিয়ে দিই ফোনে স্ক্রল করতে করতে। সোশ্যাল মিডিয়ার মজার ভিডিও, পোষা প্রাণীর কীর্তিকলাপ, কিংবা বন্ধুদের ঘোরাঘুরির ছবি—এসব দেখতে দেখতে কখন যে সময় গড়িয়ে যায়, টেরও পাওয়া যায় না।

ফোন স্ক্রলিংয়ের আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

এই অনবরত স্ক্রল করার অভ্যাসটা অনেকের জন্য একপ্রকার নেশায় পরিণত হয়েছে। কেন এমনটা হয়? এবং কীভাবে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? চলুন, বিবিসির একটি প্রতিবেদন থেকে বিশেষজ্ঞদের মতামত জেনে নিই।

আমরা বারবার স্ক্রল করি যে কারনে

যুক্তরাজ্যের লিডস বেকেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী এইলিশ ডিউকের মতে, ফোনে স্ক্রল করা এখন এতটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে আমরা নিজেরাও বুঝতে পারি না কখন এটি শুরু করি। এক গবেষণায় জানা গেছে, অনেকেই মনে করে তারা প্রতি ১৮ মিনিটে একবার ফোন চেক করে, অথচ বাস্তবে তারা আরও ঘন ঘন ফোন ব্যবহার করে।

মস্তিষ্কের ভেতরে যা ঘটে

আমরা যখন নতুন বা আনন্দদায়ক কিছু দেখি, তখন মস্তিষ্ক থেকে ‘সুখানুভূতি’ তৈরি হয়। যেমন- প্রিয় গান শোনা বা চকলেট খাওয়ার মতোই ফোনের মজার কনটেন্টও এই অনুভূতি জাগায়। এ কারণেই আমাদের মস্তিষ্ক বারবার ফোনের দিকে ঝোঁকে। যদিও মস্তিষ্কের আরেকটা অংশ আমাদের কাজে মনোযোগ দিতে বলে, তবুও তা সবসময় কার্যকর হয় না, বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে।

স্ক্রল কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের তিনটি পরামর্শ

১. ফোন থেকে কিছুটা সময় দূরে থাকুন

নিয়মিত বিরতি নিন। ফোন পাশে না রেখে বাইরে হাঁটুন, কারও সঙ্গে কথা বলুন, অথবা ব্যায়াম করুন। এতে মস্তিষ্কও বিশ্রাম পায়।

২. বাস্তব জীবনের জিনিসে মনোযোগ দিন

যেসব কাজ আপনি ফোনে করেন, সেগুলো ফোন ছাড়াও করা যায় কি না ভেবে দেখুন। যেমন, সময় দেখার জন্য সাধারণ ঘড়ি ব্যবহার করুন, বা ই-বুকের বদলে প্রিন্টেড বই পড়ুন।

৩. নিজের আচরণ সম্পর্কে সচেতন হোন

ফোন হাতে নিলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন—“আমি এটা কেন ধরলাম?” যদি চিন্তা করে কাজ করেন, তাহলে অপ্রয়োজনীয় স্ক্রলিং কমানো সহজ হবে। যেমন ক্ষুধা পেলে আমরা খেতে চাই, তেমনই স্ক্রল করার আগেও নিজেকে প্রশ্ন করুন—এটা কি এখন জরুরি?

ফোন স্ক্রল করাটা একেবারে খারাপ নয়, তবে যদি সেটা আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে বা কাজে ব্যাঘাত ঘটায়, তাহলে সচেতন হওয়া জরুরি। ধীরে ধীরে অভ্যাস পরিবর্তন সম্ভব—শুধু দরকার ইচ্ছাশক্তি আর মনোযোগ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url